বাবলি-বুদ্ধদেব গুহ
বাবলি
বুদ্ধদেব গুহর গল্প মানেই যেন বাঙালির হৃদয়ের সঙ্গে আদুরে আবদারে মাখা এক অনুভূতি। প্রেমের অমন বন্য, একরোখা চেহারা খুব কম সাহিত্যিকই তাঁর মতো করে ভাবে ভাষায় প্রকাশ করতে পেরেছেন। যে প্রেম বাধাবন্ধনহীন খোলা আকাশে উন্মুক্ত। যদিও এমন দামাল প্রেমের গল্প বুদ্ধদেব গুহ অগুন্তি লিখেছেন। কিন্তু ‘বাবলি’ (Babli) হল তাঁর বেস্টসেলার। ফলে বাঙালির মনে বহু আগে থেকেই জায়গা করে নিয়েছে উপন্যাসটি।
বাবলি নিছক প্রেমের উপন্যাস নয়। এই কাহিনীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মানব-মানবীর প্রেম মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে । প্রকৃতিকে ঠিক কতটা ভালোবাসলে, শুধুমাত্র কলমের সাহায্যে যে প্রকৃতির এত অপরূপ সুন্দর ছবি আঁকা যায়, তা এই উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে অনুভূত হয়।
‘বাবলি’ (Babli) যাকে তেমন করে চোখে পড়ে না, চেহারায় নেই আতিশয্য, বেশ একটু মোটার দিকেই, যে অনেক ভিড়ে হারিয়ে যেতে পারে, ঘরোয়া, আলগা মিষ্টি এক বাঙালিনি। তাঁর মধ্যে ভালবাসা আছে, হিংসে আছে, সেও নিজেকে উজাড় করে দিতে পারে নিজের ভালবাসার মানুষের কাছে। অন্যদিকে, গল্পের নায়ক সাহিত্যিক অভিরূপ সেন বা অভি হল যাকে বলে হ্যান্ডসাম হাঙ্ক। সাঁতার থেকে ব্যাডমিন্টন— সবেতেই সে সিদ্ধহস্ত। যেন সেই পারফেক্ট হিরোটি। এই বাবলি আর অভি-র রসায়নই হল বুদ্ধদেবের উপন্যাসের টান।
লেখক-সাহিত্যিকদের চোখে গল্পের নায়িকা মানেই সুন্দরী, ছিপছিপে আর বুদ্ধিদীপ্ত। কিন্তু বাবলি দলছুট। তাই বাবলির ভাল লাগে না লেখকদের বা তাঁদের গল্পের নায়িকাদের! কিন্তু সে কি জানত যে সেও একদিন লেখকের কলমেই এক মধুর প্রেমের উপাখ্যানের নায়িকা হয়ে উঠবে! তার জীবনেও আসবে এক নায়ক। যে তাকে দেখে মুগ্ধ হবে, তারই প্রেমে পড়বে! সাহিত্যিক অভিবাবুর চোখে বাবলি সুন্দরী।
অভি আর বাবলি অচেনা দুই নারী-পুরুষ এক দুঃসাহসিক পথে পাড়ি দিল। যাকে বলে রোম্যান্টিক, অ্যাডভেঞ্চারাস জার্নি। গহন জঙ্গল, পাহাড় তাঁদের তীব্র ইন্ধন জোগাল আর তাতেই জমে উঠল প্রেমের রসায়ন। কিন্তু আবার সেই ত্রিকোণ প্রেমের ট্যুইস্ট। অভি আর বাবলির জীবনে এসে হাজির ঝুমা বোস। পেশায় এয়ারহোস্টেস। বাবলিরই বান্ধবী। সুন্দরী, ঝকঝকে, স্মার্ট, তন্বী।
অভি-বাবলির মধ্যে দূরত্ব তো তৈরি হবেই! বাবলি ভুল বুঝতে থাকল অভিকে! যারা উপন্যাস পড়েননি, তাঁদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কী হবে এরপর?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ